
অন্তর্যাত্রা
রোজার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে কত শত লেখা ও আলোচনা যে প্রচারিত হয় তা হয়তো গোনা হয়ে ওঠে না। থাকে সংযমের শিক্ষা, ত্যাগের শিক্ষা, পরিশুদ্ধ হওয়ার শিক্ষা। বলা হয়, এটি সংযম সাধনার মাস। অন্যায় থেকে দূরে থাকার সময়। অন্য মানুষের জন্যে ভাবতে শেখার সময়। যারা খোদার অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন, তারা রোজা রাখেন। অনেকে এমনি-এমনিই রাখেন। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট দেশের সংস্কৃতির অংশ হিসেবে। অনেকে স্বাস্থ্যগত কারণে রাখতে পারেন না। অনেকে স্বাস্থ্যগত কারণেও রাখেন। গবেষকরা অনেক আগেই রোজা রাখার শারীরিক উপকারিতার কথা বলে গেছেন।
তবে আমাদের মধ্যে এক ধরণের খাবো-খাবো প্রবনতা তৈরী হয়। সারাদিন যা খাওয়া হয়নি সন্ধ্যায় তা একবারে খেয়ে নিতে চাই। আমার বিশ্বাস দিনের বেলা পানাহার না করা একটি প্রতিক মাত্র। এর প্রতিককে ব্যবহার করে এ মাসে একটি অন্তর্যাত্রা শুরু করতে হয়। মানসিক, শারীরিক – দুটোই। মনের ভেতর এই অন্তর্যাত্রা না ঘটলে কোন পরিশোধন আসে বলে আমার মনে হয় না।
অনেক ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার লোভ সামলাতে পারেন না। খাদ্যে অবলীলায় ক্ষতিকর ভেজাল মেশান। ধনীরা অনেকেই অনেক অপচয় করেন। ক্ষিদেয় অনেকে রাগ সামলাতে পারেন না – রাস্তা-ঘটে, গাড়ির মধ্যে সংঘাত হয়। আর অনেক মানুষের কোন খাবার থাকে না।
এবার রোজা এসেছে অন্য এক বাস্তবতায়। এই বাস্তবতা সবার জন্যে একটি ভাল সুযোগ। এখন দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষের কাজ নেই। রোজগার নেই। অভাব, অনাহার। এদেরকে কেন্দ্র করেই অন্তর্যাত্রা উপলব্ধি করার এই সুযোগ।
আমাদের জীবনাচরণে রোজার অন্তর্যাত্রা প্রতিফলিত হোক।
**এই লেখায় কাউকে আঘাত দিয়ে থাকলে ক্ষমা চাই। এ একান্তই আমার চিন্তা; অন্য কারো সাথে নাও মিলতে পারে।