
হুমায়ূনের ‘কিছুক্ষণ’
এমন ‘কিছুক্ষণ’ সব লেখকের চৈতন্যেই ইথারে ভেসে আসে। তাঁরা একটা সময়কে কেন্দ্র করে, সেই সময়ের মধ্যে আমাদের আশেপাশের চরিত্রগুলোর ভাবনা এবং কর্ম প্রতিফলিত করার একটা সুযোগ পেয়ে যান। গল্পকার সময়ের ফ্রেমে চরিত্রগুলোকে ফেলে দিয়ে সমাজকে চিত্রিত করেন। সময়টা গুরুত্বপূর্ণ এ কারণেই যে ঐ সময়ের মধ্যে চরিত্রগুলো যে কর্ম করবে তা দেখে পাঠকের মনে কি বেদন-বিভাব হবে তার পরিপ্রেক্ষিৎ তৈরি করা যাবে।
হুমায়ূনও এই উপন্যাসিকায় তাইই করেছেন। ‘উপন্যাসিকা’ শব্দটা তেমন বুঝে বলছি না। এই গল্প একটা টেলিভিশন নাটক বা সল্পদৈর্ঘ সিনেমাও হতে পারে।
তিনি যাদেরকে নিয়ে গল্পটি ফাঁদবেন তাদেরকে একটা রেলগাড়িতে চড়িয়ে দিয়েছেন।
হুমায়ূন আসলে কিছু বার্তা দেবেন।
ধরুন একটা বাঘ, একজোড়া ভাল্লুক, তিনটি হরিণ, কিছু পাখ-পাখালি এবং দু’জন মানব-প্রাণীকে এক খাঁচায় ভরে দিয়ে স্রষ্টা তাদের কথোপকথন শুনছেন। ওরা কি করলো, কেমন করে লম্ফ দিল, কে কাকে খেয়ে ফেললো – সব দেখবেন।
এই গল্প হুমায়ূনের দেখার মিশন।
হুমায়ূন মদ্যপান নিয়ে বেশ মজা করতে ভালবাসেন। কে মদ্যপান করে না? সবাই করে। আবার কেউ কেউ করে না। তবে যারা মদ পছন্দ করে তাদের মদ খাইয়ে দিয়ে হুমায়ূন মজা দেখতে পছন্দ করেন।
এই বইয়ের আরও মজার বিষয় হচ্ছে তিনি এক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে হাজির করেছেন তার সময়ের ফ্রেমে। এই সময়ের মধ্যেই তার মন্ত্রীত্ব চলে গেল, আবার ফিরেও এলো। ফেইক নিউজ। কিন্তু তার মধ্যেই মন্ত্রীর যে ধরাশায়ী অবস্থা তা বোঝার বিষয়। মন্ত্রীত্ব চলে যাওয়ার খবর শুনে মন্ত্রী স্বজনেরা রেলগাড়ি থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে জান বাঁচালো।
হুমায়ূন ধর্মান্ধতার চিত্রও তুলে ধরেছেন। এই পর্ব জানতে হলে ‘কিছুক্ষণ’ পড়ুন…ভাল লাগবে…
#পড়তে_পড়তে #হুমায়ূন_আহমেদ